আপনারা হয় তো অনেকেই এনাকে চিনতে পারবেন..
ইনি হলেন 'মনু' (নাম টি পূজনীয় বাবাই দাদার দেওয়া) ফারকাটিং সৎসঙ্গ বিহার মন্দিরের গত ১৩ বছর ধরে নিবাসী..ঠাকুরের আশীর্বাদে আমি যদি সেই মন্দির এ না যেতাম আমার হয় তো এরকম একজন মহান পশুর সাথে দেখা হতো না..
পশু বললে ভুল হবে ঠাকুরের প্রতি এনার অটুট ভক্তি বোধেহয় মানুষের মধ্যেও দেখা যাই না...প্রভু ভক্তি কি ভাবে করতে হয় আমি অনেকটাই এনার থেকে শিখলাম..
ইনি প্রত্যেক দিন ভোর বেলা ও সন্ধে বেলা প্রার্থনা সময় ইনি ঠিক মন্দিরের সামনে বসে প্রার্থনা করতে বসেন..আর প্রার্থনার পর..এক এক করে..ঠাকুর, বড়মা, বড়দা আর দাদা সবাইকে গিয়ে প্রণাম করে আস্ত..আর একটা কথা শুনলে অবাক হবেন ইনি মন্দিরের প্রসাদ ছাড়া কিছু গ্রহণ করতো না..
একটা অনুভব বলতে চাই..২০১৯এ যখন পূজনীয় সিপাই দাদা ফারকাটিং মন্দির এর উদঘোটন এর জন্য এসেছিলেন...তিনি মন্দির এ আসার আগে সেখানে আশা গুরুভাই/গুরুভইন রা যখন সময় মতো মন্দিরে না আসতে অস্থির হয় উঠলেন..
ইনি (মনু) এক জায়গা থেকে র এক জায়গা হেটে হেটে অস্থির হয় পড়লেন..তারপর যখন দাদা আসলেন..দাদা আসার থেকে মন্দির এ প্রণাম করে জায়গা তে বসার অব্দি ইনি দাদার চরণ ছাড়েন নি...এনাকে দেখে মনে হচ্ছিলো ইনি যেন পূজনীয় সিপাই দাদার বডিগার্ড..তারপর ঠিক সিপাই দাদা র পায়ের সামনে ইনি বসে পড়লেন..র সাথে সাথে পূজনীয় সিপাই দাদা হটাৎ করে মনুর গায়ে হাত দিয়ে বললেন 'কেমন আছিস মনু?'..ইনি তখন নিজের মাথা তা দাদার পায়ে রেখে দিলেন..মনে হলো মনু যেন দাদা কে বললেন 'ভালো আছি দাদা'..দৃশ্য তা খুবেই অপূর্ব ছিল..
উৎসব এর ২ দিন পর আমি সেখান থেকে বাড়ি ফিরে আসি..মনু মানুষ দেড় সামনে খুব কম আসতো .কিন্তু যখন আমি প্রথমবার যাই তখন সে হটাৎ করে আমার সামনে এসে বসলো..আর আস্তে করে নিজের মাথা তা আমার ব্যাগ এর ওপর রেখে দিলো..অনেক সময় পর আমি বুজতে পারলাম যে আমার ব্যাগ এ রাখা বিসকুট খাবার জন্য সে আমার দিগে তাকিয়ে আছে..তখন আমি সে বিসকুট ওকে খেতে দিলাম...সেইখানকার পূজারী এসে আমাকে বললেন..'মনু তো কারোর হাতে কিছু খাই না..কিন্তু তোমার হাতে কি করে খেলো ?'..আমি বাড়ির ফেরার সময় মন্দির এ প্রণাম করে এসে দেখি মনু মন্দিরের বারান্দায় বসে আছে..তখন আমি তাকে বললাম যে 'আমি আসি মনু তুই ভালো করে থাকিস' এই কথা শুনে সে অনেক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে রইলো...মনে হলো কিছু বলতে চাইছে..তারপর আমি মন্দিরের গেট এর বাইরে বেয়ে হওয়া অব্দি সে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো..মনু কে দেখে আমার চোখে জল এসে পড়লো..সে ২দিন এর মধ্যে মনুর সাথে একটা অটুট সম্পর্ক হয় উঠলো যেন ও আমার অনেক দিনের চেনা..আশা করে ছিলাম আবার ওর সাথে দেখা হবে..
কিন্তু সে দিন আর আসলো না...
গত কাল মনু এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো কয়েকদিন ধরে খুব অসুস্থ ছিল...
কথা তা শুনে মনে হলো যেন নিজেরেই একজন মারা গেছে...
যেতে যেতে ও আমাকে মানুষত্তো আর ঠাকুর ভক্তি শিখিয়ে দিয়ে গেলো..মনুর মতন ঠাকুর ভক্তি হয় তো আমার নেই...
সে সবসমই আমার হৃদয়ে থাকবে..
ঠাকুরের শ্রী চরণে ওর আত্মার শান্তি কামনা করি..ও যেন শ্রী শ্রী ঠাকুরের শ্রীচরণে ঠাঁই পাক...
Comments
Post a Comment